নদীয়া : মা এখানে কুলপতি নামে পরিচিত, এখনো প্রাচীন মিষ্টার সঙ্গে ৬০০ বছর ধরে পূজিত হচ্ছে রায় বাড়ীর দুর্গাপুজো শান্তিপুরের রায় বাড়িতে দুর্গা একা পূজিত হন। অসুরের হাতে থাকে খড়্গের বদলে মাটির তলোয়ার। পূজার আচারও একটু অন্য ধাঁচের। পুরনো নকশা কাটা দোতলা বাড়ি। এক অংশে কিছুটা আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। সামনে ফাঁকা চত্বর। পাশেই দেবীর দালান ঘর। নদিয়ার শান্তিপুর স্টেশন থেকে বাইক, নয়তো গাড়ি করে মিনিট কুড়ির পথ।
শান্তিপুরের রায় বাড়ি। জমিদার পরিবার। তাঁদের দুর্গাপুজো প্রায় ৬০০ বছরের বেশি পুরনো। মা দুর্গা এখানে ‘কুলোপতি’ দেবী নামে পরিচিত। দেবীর রূপ সাধারণই। দশ হাতে অসুর বধ করছেন তিনি। অসুরের চেহারায় রয়েছে বদল। হাতে খড়্গর পরিবর্তে রয়েছে মাটির তলোয়ার।শহর বা শহর ছাড়িয়ে বিভিন্ন বনেদি পুজোতে দেবী তাঁর সন্তানদের সঙ্গেই পূজিত হন। কিন্তু রায় বাড়িতে তাতেও বদল। শান্তিপুরের রায়বাড়ির পুজোয় মা দুর্গা একা একাই পূজিত হন।
নেই লক্ষী-সরস্বতী, গণেশ-কার্তিককে। রায় বাড়িতে মা একা। একদম শুরুর দিকে ‘কুলো’কে দেবীর হিসেবে পুজো করা হত। তার পরে কিছু সময় গড়িয়ে যাওয়ার পর মূর্তি তৈরি শুরু হয়। তা’ও শুধুই দুর্গার। কথিত আছে, এখানে পুজো শুরু হয় মায়ের ‘স্বপ্নাদেশ’ পাওয়ার পর। জানা যায়,স্বপ্নাদেশে পাওয়া এই পুজো। মা দুর্গাকে কুলোয় এঁকে পুজো করেছিলেন গৃহকর্তী। এরপর থেকেই শান্তিপুরের রায় বাড়ির মা দুর্গার নামকরণ হয় কুলো দেবী।
পরিবারের দাবি, ৫০০ বছরের পুরনো এই পুজোতে দেবী এখানে একাই পুজিত হন, থাকেন না তার সন্তানেরা। শান্তিপুরের বহু প্রাচীন রায় বাড়ির এই পুজোকে ঘিরে জড়িয়ে আছে অনেক ইতিহাস। রায় বাড়ির এই দুর্গাপুজো অন্যান্য পুজোর থেকে হয় অনেকটাই আলাদা।দশমীর দিন দেবীকে বিদায় জানানোর সময় পায়েস মুখেই বিদায় জানানো হয়। এবারেও সেজে উঠছে রায় বাড়ি। দূর দূরান্তে বাস করা পরিবারের লোকজন তাঁদের বাড়িতে ফিরতে সাগ্রহে তাকিয়ে আছেন দুর্গাপুজোর দিকে।