দিনহাটা: নিজের কাজ বন্ধ করে দিনহাটা হাসপাতালে ভর্তি থাকা ক্যান্সার রোগীকে রক্ত দিলেন পেশায় রংমিস্ত্রি এক যুবক। যখনই ডাক পান তখনই ছুটে যান রক্ত দিতে। ওই যুবকের নাম রবি পাশি । মঙ্গলবার দিনহাটা হাসপাতালে ক্যান্সার আক্রান্ত এক রোগীর জন্য রক্ত দিতে পেরে বেশ ভালো লাগছে বলে জানান রবি পাশি।
দিনহাটার মাতালহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের ভূত কুরা গ্রামের ভক্তেশ্বর বর্মন। মাসকয়েক আগে তিনি অসুস্থ হয়েছেন। পরিবারের লোকেরা তাকে অনেক কষ্টে ব্যাঙ্গালোরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসাও করিয়েছেন। কিছুদিন সুস্থ থাকলেও তারপর আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখনই ধরা পড়ে ক্যান্সার।
কিছুদিন বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে ভর্তি করে পরিবারের লোকেরা। এমত অবস্থায় রক্তের প্রয়োজন। ভক্তেশ্বর বর্মনের পরিবারের পক্ষ থেকে রবি পাশির সাথে দেখা করে এক বোতল রক্ত দেওয়ার আবেদন করতেই রাজি হয়ে যায় রবি। এদিন অন্যান্য দিনের মতো কাজেও যান। এরপরেই ওই পরিবারের লোকেরা তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করতেই কাজ বন্ধ করে রবি ছুটে যান হাসপাতালে। সেখানে হাসপাতালে ভর্তি ক্যান্সার আক্রান্ত ঐ রোগীর জন্য রক্ত দান করেন রবি।
রবি জানায়, কাজ সারা জীবন করতে হবে। তবে আমার এক বোতল রক্তে যদি কারো জীবন বাঁচে এর চেয়ে বড় কিছু হয় না। তাই ওই পরিবারের পক্ষ থেকে যখন আমার কাছে রক্ত দেওয়ার কথা বলা হয় আমি সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যাই। এর আগেও বেশ কয়েকজনকে রক্ত দিয়েছি।
চিকিৎসাধীন ভক্তেশ্বর বর্মনের স্ত্রী মিলন বর্মন বলেন, গত কয়েক মাস ধরে আমার স্বামী অসুস্থ থাকায় তাকে বাইরে নিয়ে গিয়েছিলাম চিকিৎসার জন্য। বর্তমানে আর্থিক অনটনে পড়েছি। ক্যান্সারের মতো দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত আমার স্বামী। এখন প্রতিমাসেই রক্ত দিতে হচ্ছে। রবি পাশি জানতে পেরেই যেভাবে রক্ত দিতে কাজ বন্ধ করে ছুটে এসেছে তা বলার ভাষা নেই। পেশায় একজন রংমিস্ত্রি হয়েও তার এই অবদান শোধ করার নয়।
অসুস্থ ভক্তেশ্বরের ছেলে রিঙ্কু বর্মন বলেন, বাবা অসুস্থ। রক্তের প্রয়োজন। আমরা রক্তের যোগাড় করতে গিয়ে পেশায় রংমিস্ত্রি রবি পাশি কি জানাতেই তিনি ছুটে এসে রক্ত দেন। এভাবে রক্তদানে মানুষ এগিয়ে এলে সমাজের রক্তের সংকট অনেকটাই কমে যাবে